Friday, March 14, 2025

তেঁতুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক

আরও পড়ুন

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি জেলা সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যাচার বক্তব্য প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুই সমন্বয়ককে বহিষ্কার করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা। তারা হলেন- হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহ (ওবায়দুল হক)।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলার আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী, সদস্য মো. আকিব ও মো. মনজিল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নিজস্ব আইডি পোস্ট করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্ত ওই দুই সমন্বয়ক জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পঞ্চগড় জেলা থেকে জানানো যাচ্ছে যে, তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছিলেন মো. হযরত আলী ও মো. ওবায়দুল্লাহ। কিন্তু ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে, তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে নানান ধরনের শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে জেলা সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যাচার বক্তব্য প্রদান করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের কাজকে কোনো ভাবেই সমর্থন করে না। তাই শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পঞ্চগড় জেলার পক্ষ থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হলো। পরবর্তী সময়ে, তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনঃ  মনে করেছিলাম ২০২৪ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু হয়নি: হিরো আলম

অভিযোগ তুলে বহিষ্কারের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলার আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন অফিসে গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। তার প্রতিবাদ করায় আমাদের গুপ্ত সংগঠন ও শিবির বলে অপ্রচার চালাচ্ছে। কয়েকদিন আগে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পথে কারণ ছাড়াই জেলার সমন্বয়ক সান ও আমাকে মারতে এসেছে। একই সঙ্গে তারা আমাদের গুপ্ত সংগঠনের সদস্য বলে আখ্যা করছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে আমরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

ফজলে রাব্বী বলেন, আন্দোলনের তেঁতুলিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে আমরা সব সময় তাদের প্রাধান্য দিয়েছি। কিন্তু তারা নিজের সুনাম ধরে না রেখে কিছুদিন আগে শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উস্কানি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একক সিদ্ধান্তে হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধনের ডাক দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করেন। প্রচারের কিছুক্ষণ পরই তেঁতুলিয়ায় জুলাই আগস্ট আন্দোলনে যুক্ত থাকা সমন্বয়ক, পঞ্চগড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের একক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিরোধিতা ও তাদের কর্মসূচিতে যোগ না দেয়ার আহ্বান জানান। পরে রাতেই তাদের কর্মসূচি স্থগিত হয়। এই সুযোগে ইউএনওর নামের সঙ্গে আমাদের যুক্ত করে অপপ্রচার চালানো শুরু করে তারা। যার কোনো ভিত্তি না থাকায় এবং বিভিন্ন শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকায় আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা বহিষ্কার করি।

আরও পড়ুনঃ  ছবিটি আসলে কার? ডিআইজি হারুন নাকি ছাত্রলীগের গোলাম রাব্বানীর?

এদিকে অভিযুক্ত হযরত আলী ও ওবায়দুল্লা বলছেন, সারাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা নিজেদের জায়গা থেকে সবার মত আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা কারো কথায় আন্দোলন করিনি। যে অভিযোগ তুলে আমাদের বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে সেটার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ে কোনো কমিটি নেই। আর সে কারণে তিনি বহিষ্কার করতে পারেন না।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বী বলেন, আমি কারো পক্ষে কাজ করি না। আমি জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে অনেকে অনেকভাবে চাঁদাবাজির চেষ্টা করেছে, করে আসছে। এগুলোর বিরুদ্ধে আমি সব সময় সোচ্চার থাকায় আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠছে। বহিষ্কারের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বা আমি কারো সঙ্গে যুক্ত না, শৃঙ্খলার বাইরে কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত না। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটার সত্যতা যাচাই করে দেখা উচিত। আমরা সরকারের নির্দেশনা মেনে কাজ করি। এখানে কারো শেল্টারের প্রয়োজন নেই। কারো ছত্রছায়ায় থেকে অপকর্ম করার প্রচেষ্টা করার কোনো সুযোগ এই চাকরিতে নেই। যদি কারো অভিযোগ থাকে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করুক। আমি জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি স্যারকে বলেছে যদি কোনো অভিযোগ থাকে সেটা তদন্ত হোক। তদন্ত হওয়ার পর সত্য প্রমাণিত হলে আমাকে শাস্তি দেয়া হোক। আর যদি তা না হয়, তাহলে এটাকে অপপ্রচার হিসেবে ধরে নেয়া হোক।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ