Friday, March 14, 2025

স্ত্রী’র সাথে শেষ ফোনালাপে যা বলেছিলেন শহীদ মেজর তানভীর

আরও পড়ুন

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬শে ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ চলাকালে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়।

সম্প্রতি সেই ঘটনায় নিহত মেজর তানভীরের স্ত্রী ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমার হাসব্যান্ডের সাথে আমার লাস্ট ফোন কলে যে কথাগুলো হয়েছিল, লাস্ট টাইম আমি খাটের নীচে ছিলাম আমার বাচ্চাদেরকে নিয়ে। ও আমাকে বলল এখানেও না। তুমি আরো মানে ওয়ারড্রব এর ভিতরে ঢুকে যাও। এ রকম সিচুয়েশন তো আমাদের লাইফে কখনও হয়নি৷

আমার সংসার লাইফে ভিতরে যে এই ধরনের হবে বুঝিনি। আবার গোলাগুলি শুরু হয়েছে এটা আমি বুঝতে পারিনি। এইটুকু সময়ের মধ্যে আমি আমার হাসব্যান্ডকে ফোন করে যখন পাই না তাঁর মোবাইলটা বন্ধ থাকে আমি বিভিন্ন নম্বরে ট্রাই করতে থাকি।কোন নম্বরে ফোনটা রিসিভ করে না। আমার হাসব্যান্ড এর রানার থাকে সালেহ৷ ওকে ফোন করি আমাকে একটা রিকশা ডেকে দেওয়ার জন্য হাসপাতালে যাব। আর তাঁকে আসতে বলি। কারণ আমি খুব ভয় পাচ্ছি তার মধ্যে কিন্তু আমার বাসায় গুলির ঘটনা আপনাকে বললাম যে বাথরুমে গুলি হয়েছে আর আমি যখন জানলা দিয়ে দেখি তখন দেখি রাইফেল আর বাঁশের কাটা অংশ নিয়ে লোকজন মানে বিডিআর যে সদস্যরা আছে তারা হাঁটাহাঁটি করছে।

আরও পড়ুনঃ  খুনের আগে তোলা হয় আপত্তিকর ছবি

আমি যে জায়গাটায় ছিলাম ওটা জিমনেশিয়াম ছিল। টেনিস গ্রাউন্ড ছিল। ওখানে ছায়ানীড় বাসাটা। তিন রুমের একটা বাসা ওখান থেকে সামনের পুরোটা অংশ দেখা যায়। ওই পুরো জায়গাটার মধ্যে লোকজনে ভর্তি যাঁরা হাঁটাহাঁটি করছে এরকম ছিল অবস্থাটা। এই রকমই অবস্থা চলার সময়ে আমি সেই সালেহ ভাইকেও ফোন করলাম। সে আমার সঙ্গে খুবই দুর্ব্যবহার করল। তার কিছুক্ষণ পরে আমি সেটা নয়টার বেশি হবে। আমি আমার হাসব্যান্ড কে ফোন দেই দেই বলতে, আমি মেজর আজিজ ভাইয়ের নাম্বারে কল দিয়েছিলাম। কল দেওয়ার পর উনি তানভীরকে দেন।তানভীর আমাকে খুব শান্ত করে কিছু কথা বলেছিল। পুরোটা আমার সঠিক মনে নাই। তো ও যেটা বলে যে একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। দেখা যাক আমরা শান্ত করব। আমি চলে আসব বাট ও আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করে। আমি বারবার বলি যে এই ধরনের পরিস্থিতিতে আমি কখনো দেখিনি। কিন্তু আমার সাথে বেশি কথা বলতে পারে না। আমাকে থাকতে বলে কিন্তু সিচুয়েশন যে ধরনের হতে থাকে আমি এক পর্যায়ে বুঝতে পারি খুবই বাজে অবস্থা।

আরও পড়ুনঃ  এমপি আনার হত্যা: আদালতে তোলা হতে পারে ‘কসাই’ জিহাদকে

আমি আমার বাচ্চাদেরকে নিয়ে খাটের নিচে ঢুকে যায় মানে আমার বাসার চতুর্দিকে চলে আসে।বিডিআর এর ড্রেস পরা সদস্যরা। আমি ড্রেস পড়া বলছি, এই কারণে আমি বিডিআর সদস্য বলব। বিডিআর সদস্যরা ছিল সেখানে। কিন্তু আমাকে যখন বের করে নিয়ে যায় তখন মিক্স টাইপের লোকজনও ছিল। আমি আপনাকে সেগুলো ডিটেলস বলছি আমার হাসব্যান্ড এর সাথে আমার লাস্ট ফোন করে যে কথাগুলো হয়েছিল লাস্ট টাইম আমি খাটের নীচে ছিলাম আমার বাচ্চাদেরকে নিয়ে। ও আমাকে বলল এখানেও না তুমি আরো মানে ওয়ারড্রব এর ভিতরে ঢুকে যাও। আমি ওর সাথে কথা বলতে বলতে ওখানে ঢুকলাম। ওর সাথে আমার ফোন কলই চলছে সেই সময়ও আমাকে বলল যে তার পক্ষে আর ব্যাক করার পসিবল না। কারণ ভিতরে বহিরাগত আছে। আমাকে একটা কথা বলেছিল বহিরাগত বলেছিল লীগের নেতারা আছে, বলেছিল ইন্ডিয়ান, আরেকটা বলেছিল আমি সেটা আমার সেফটির জন্য বলছি না। আমি এখনও পর্যন্ত কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বলছি না। এই কথাটা মানে ও শেষ করতে পারে নাই। আমাকে সেফ থাকতে বলেছিল কিন্তু সে ব্যাক করা সম্ভব না। এটা সে বলেছিল।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ