Saturday, March 15, 2025

বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা আলেমদের হাতেই নিরাপদ: এ এম এম বাহাউদ্দীন

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, আমাদের ক্ষয়ে যাওয়া সমাজ ঠিক করতে হলে আলেম সমাজের বিকল্প নেই। এ জন্যে আলেম সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। মূলত সমাজটা নষ্ট করেছেন রাজনীতিবিদরা। তারা আল্লাহর অলিদের অবমাননা করেছেন। ড. ইউনুছ সাহেবের মত ১০০ ভাগ ভালো লোকের পক্ষে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা সঠিক পথে নেওয়া সম্ভব হবে না। কেননা এই সমাজ এতটাই নষ্ট হয়ে গেছে, ঠিক করা আলেমদের দারাই সম্ভব। তাই আমি বলবো রাষ্ট্র মেরামতের কাজ আলেম সমাজের হাতে দেওয়া হোক।

চাঁদপুর ইসলামপুর দরবার শরীফের ৮১ তম ইছালে ছাওয়াব মাহফিলে ১৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) সভাপতির বক্তব্যে দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, হিন্দু, মুশরিক, কাফেরদের রাজা-বাদশারা এতদ্বঅঞ্চল শাসন করেছিলেন। সেখান থেকে ডজন ডজন অল্লাহর অলিগণের দাওয়াতে আজ হাজার কোটি মানুষের মধ্যে শত কোটি মুসলমান। কয়েক ডজন অলিগণ সমাজটা তৈরি করে গেছেন।

আজকে যে রাষ্ট্র নিয়ে আমরা বড়াই করি। এটা করব সেটা করব। তা কিন্তু বহুত আগেই মুসলমানরা করে গেছেন। যখন এ অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে শিক্ষা-দীক্ষা ছিল না। কীভাবে কাপড় পরিধান করতে হতো তাও তারা জানতো না। তখন কিন্তু আল্লাহর অলিরাই আমাদেরকে এগুলি শিখিয়েছিলেন। আমার দাদা হযরত শাহ ইয়াসিন (রহঃ) পর্যায়ক্রমে একই কাজ করে গেছেন। তারা নিঃস্বার্থে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে গেছেন। নিজেদের প্রাপ্তির জন্য কখনই কিছু ভাবেননি। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তারা দ্বীনের দাওয়াত দেয়নি। তারা ইসলামী সমাজ তথা সৎ ঈমানদার দক্ষ সমাজ তৈরি করতে কাজ করে গেছেন।

আরও পড়ুনঃ  সড়কে পানি দেয়া নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১২

আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ভালো মানুষের অভাব। ড. ইউনুস সাহেবের মত যদি ১০০ জন মানুষও সামনে থাকেন তাও সম্ভবপর হবে না। মানুষের কোয়ালিটি যে পর্যায়ে ডেটরিয়েট হয়ে গেছে। মানুষ যে পর্যায়ে খারাপ হয়ে গেছে। ড্রাগস থেকে শুরু করে বেহায়া, বেহাল্লেপনা, মিথ্যাচার, ঠকবাজি, ধোঁকাবাজিতে ভরে গেছে। ড. ইউনুস সাহেব এদেরকে সঠিক পথে আনতে পারছেন না। এই কাজটি একমাত্র করতে পারবেন তারাই, যারাই এই সমাজ তৈরি করে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ আলেম সমাজ। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি মক্তব তৈরী করে নামাজের জায়গায় বসে মানুষকে সঠিক পথের দিশা দিতেন।

মূলত সমাজ নষ্ট করেছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। তারা আল্লাহর অলিদের অবমাননা করেছেন। তাই রাষ্ট্র মেরামতের কাজ একমাত্র আলেম সমাজের মাধ্যমেই করা সম্ভব। রাষ্ট্রের কাজটা আজ ফ্রিতে করে দিচ্ছে আলেম সমাজ। সরকারি টাকায় বড় বড় অবকাঠামো উন্নয়ন করা যাবে। লক্ষ কোটি দিয়ে টাকা দিয়ে অনেক স্ট্রাকচার করা হয়েছে, তার কোন অস্তিত্ব আছে, থাকবে না। টাকা পয়সার মদদে কারো কোন স্ট্রাকচার, ইতিহাস ও কল্পকথা বানালে তা টিকবে না।

আরও পড়ুনঃ  প্রেমের ফাঁদে ফেলে দুই বন্ধু মিলে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীন আরও বলেন, বিয়ে থেকে এখন তালাক বেশি হয়ে গেছে। ঘরে ঘরে অশান্তি। এতে মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব বেড়েছে। কারণ তারাই সুখে থেকে শান্তিতে ঘর সংসার করছে, সমাজকে লিড দিচ্ছে। গার্মেন্টস কিংবা কর্পোরেট হাউসে যারা চাকরি বাকরি করছেন তারা কিন্তু ঘর সংসার করতে পারছেন না। সমাজ তৈরি করতে পারছে না। টাকা পয়সা রোজগার করছেন। এতে নিজেদের জীবনে যেমন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি সমাজের জন্য ক্ষতি বয়ে আনছেন। শুধুমাত্র একজন মানুষ তৈরি মনোভাব নিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি সবাই এখন গুরুত্ব আরোপ করছেন। এ মনোভাব পরিবর্তনে আলেম সমাজের গুরুত্ব অপরিসীম।

যারা রাজনীতি করছেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় আছেন, রাষ্ট্র পরিচালনার স্বপ্ন দেখছেন। তারা কিন্তু আগে দিল ঠিক করেন। ইসলামী সমাজ, ইসলামী রাষ্ট্র করার ব্যাপারে কে কতটুক কাজে আসবেন। এই বিশাল সম্মিলিত শক্তিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা ভেবে দেখবেন। তা না হলে যে অসভ্য সমাজ, অসভ্য রাজনীতি তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছেন। তার পরিণতি কিন্তু ভালো কিছু বয়ে আনবে না।

আরও পড়ুনঃ  টিকটক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ ২ স্কুলছাত্রী উদ্ধার

চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী ইসলামপুর দরবার শরীফের ৮১ তম ইছালে ছাওয়াব মাহফিল প্রতিবছর ফুরফুরা শরীফের পীরে কামিল, মুজাদ্দিদে জামান, শাহছুফি আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিকী আল কুরাইশী (রহ.) এর সুযোগ্য খলিফাদ্বয় পীরে কামিল আলহাজ্ব হযরত মাও. শাহছুফি মো.ইয়াছিন (রহ). ও পীরে কামিল আলহাজ্ব ছুফি মো. খলিলুর রহমান (রহ). এর প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

১৬ ও ১৭ জানুয়ারি বৃহস্পতি ও শুক্রবার মাহফিলের বয়ান করেন ফুরফুরা দরবার শরীফ ভারত, আব্দুল্লাহিল মারুফ ছিদ্দিকী আল কোরাইশী, দেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আলহাজ হযরত মাওলানা মো. রুহুল আমিন আফসারী, আন্তর্জাতিক বক্তা আলহাজ হযরত মাওলানা নেছার আহমাদ, পীরজাদা আলহাজ হযরত মাওলানা মু. কুতুবুল আজম খান, হযরত মাওলানা শরীফ হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, হযরত মাওলানা আমীর হোছাইন, মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান, হযরত মাওলানা মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন চিশতী, মাও. মিজানুর রহমান, মাও. হোসাইন আহমেদ খলিফা, হাফেজ শাহ রহমতুল্লাহ, হাফেজ মোস্তফা ও হাফেজ মাও. মাকসুদুর রহমানসহ স্থানীয় ওলামায়ে কেরামগণ।

ইন্তেজামিয়া কমিটির পক্ষ থেকে মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মাওলানা মাঃ জোবায়ের হোসাইন, মাঃ আবু জাফর ও ইসলামপুর দরবার শরীফ টাস্ট্রের ব্যবস্থাপক মো. আবুল খায়ের ফরায়জী।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ