খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে জামায়াতের সমাবেশ মঙ্গলবার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে বিচারিক কার্যক্রমগুলো সারা বিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত। স্বৈরাচারের আমলে গ্রেপ্তার এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে। সরকার ইচ্ছা করলে মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিতে পারেন। তাই সরকারের প্রতি আহ্বান দ্রুত তাকে মুক্তি দেওয়া হোক। দেশবাসী স্বৈরাচারের কবল থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি চায়। এই পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) খুলনা প্রেসক্লাবের লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শহীদ হাদিস পার্কের বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল উপলক্ষ্যে খুলনা মহানগরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামী এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যায়। দেশ স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তিলাভ করে। রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় ফ্যাসিস্ট সরকারের গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মী মুক্তিলাভ করেন। রাষ্ট্রপতির আদেশে অনেককে তাৎক্ষণিক মুক্তি দেওয়া হয়। দেশবাসী আশা করেছিল যে, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার এটিএম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৬ মাস ৮ দিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তিলাভ করেননি। জামায়াত স্বৈরশাসনামলে জুলুম এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর স্বৈরশাসনমুক্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এখনো বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, শহীদ পার্কের বিশাল সমাবেশে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা থেকে পৃথক পৃথক মিছিল হাদিস পার্কে আসবে। সেখানে প্রায় ৩০/৪০ হাজার মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছি। সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এই সমাবেশে সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মহানগরী ও জেলায় মাইকিং করা হয়েছে। লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো, ফেরীঘাট মোড়, পাওয়ার হাউজ মোড় হয়ে মীর মুগ্ধ মোড়ে (শিববাড়ি) গিয়ে শেষ হবে। এ মিছিলে শামিল হবে মহানগরী ও জেলার সর্বস্তরের জনগণ। গোটা নগরী পরিণত হবে মিছিলের নগরীতে ইনশাআল্লাহ।
খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান স্বাগত বক্তৃতায় বলেন, ২০১২ সালে এটিএম আজহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সাজানো মামলা ও পাতানো বিচারের মাধ্যমে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
প্রেস বিফ্রিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজি, মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসাইন মিলন, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমির মাওলানা শেখ মো আবু ইউসুফ প্রমুখ।