Saturday, March 15, 2025

দুই ওসির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, তাহলে আসামি গেল কোথায়?

আরও পড়ুন

ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ভূল্লী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার দাবি করছেন, তিনি আটক এক আসামিকে সদর থানায় হস্তান্তর করেছেন। অথচ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান বলছেন, তারা এমন কোনো আসামি গ্রহণ করেননি। এ ঘটনায় পুলিশের স্বচ্ছতা ও দায়িত্ব পালন নিয়ে জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলীকে আটক করে ভূল্লী থানার পুলিশ। ভূল্লী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সরকার শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা পোস্টকে জানান, ওই দিন দুপুর ২টায় আটক ব্যক্তিকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ইলিশ আগে পাবে দেশের মানুষ, পরে রপ্তানি: উপদেষ্টা

কিন্তু একইদিন রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সদর থানার ওসি শহিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ভূল্লী থানা আমাদের কাছে কোনো আসামি হস্তান্তর করেনি। আমরা এমন কাউকে আটকও করিনি।’ ভুল্লী থানার ওসির কথা বলতেই তিনি জৈনিক আরিফ নামে একজনকে মুঠোফোনের ধরিয়ে দেন কথা বলার জন্য। আরিফকে এমন প্রশ্ন করাতেই তিনি ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধির সঙ্গে উগ্র আচরণ করে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।

এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—তাহলে আসামি গেল কোথায়?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম এর সঙ্গে রাতেই যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, `বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। ওসির সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখছি।‘ কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি। পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামের রহস্যজনক নীরবতা।

আরও পড়ুনঃ  এমপি আনার হত্যার সময় ফ্ল্যাটে ছিলেন শিলাস্তিও, আসামিদের লোমহর্ষক বর্ণনা

গোপন সূত্রের দাবি, মোহাম্মদ আলীকে আসলে সদর থানায় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাকে গোপনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগেও সদর থানায় এমন অভিযোগ উঠেছিল।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই শুনছি, টাকা দিলেই আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগেও এমন এক ঘটনায় এক এএসআইকে বদলি করা হয়েছিল।’

বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন

অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরাসরি জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা বিচার পাচ্ছেন না, অথচ অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  আনসারদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ দফা

পুলিশের এমন ভূমিকা আইনের শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে। অনেকেরই প্রশ্ন, আইনের শাসন কি কেবল দুর্বলদের জন্য? প্রভাবশালী হলে কি পুলিশও অসহায় হয়ে পড়ে?

এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত—এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যথায়, পুলিশের প্রতি জনসাধারণের আস্থা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ